হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা কেন? সহিংসতা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করুন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৪:২০
নির্বাচনের সময় হাসপাতালগুলোকে জরুরি সেবা জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসাথে অ্যাম্বুলেন্সগুলো স্ট্যান্ডবাই রাখতেও বলা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তাহলে খোদ নির্বাচন কমিশনই কি ভোটের দিন বা এর পরে সহিংসতার আশঙ্কা করছে? নির্বাচন কমিশন যদি সহিংসতার আশঙ্কা করে থাকে তাহলে সহিংসতা পরিহার বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা না করে কেন হাসপাতালগুলোকে জরুরি সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলে?
নির্বাচন কমিশনের উচিত সংবিধানে দেয়া তাদের প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে সহিংসতা পরিহার করার ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময় যদি ইসি কঠোর হাতে হামলা-মামলা প্রতিরোধ করতে পারত, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারত তাহলে নির্বাচনে কেউ সহিংসতা দেখানোর দু:সাহস দেখাতে পারত না। কিন্তু দু:খের বিষয় ইসি এখানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সহিংসতা দেখেও ইসি হাত গুটিয়ে বসে ছিল। তারা কোন কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি নারী প্রার্থীদের উপর হামলা হলেও ইসি ও প্রশাসন ছিল নির্বিকার।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার। আহত অনেকে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিতেও ভয় পাচ্ছে। দেশে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
ইসির সামনে সুযোগ আছে এগুলোকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার। দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইসিকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। যদিও ইসি এখন পর্যন্ত সেরকম কোন কার্যক্রম দেখাতে পারেননি।
হাসপাতালগুলো এমনিতেই সেবার জন্য প্রস্তুত থাকে। হাসপাতালের কাজই রোগিকে সেবা দেয়া। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদিও আগে থেকেই এরকম কিছুর আশঙ্কা করে থাকে তাহলে তাদেরকে সেগুলো প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করবেন না প্লিজ।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
নির্দেশনা বলা হয়েছে- আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২৯, ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর তিন দিন নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজনে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ দেশের সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালসমূহ সার্বক্ষণিক প্রস্তুত এবং অ্যাম্বুল্যান্স স্ট্যান্ডবাই রাখতে হবে।
সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রায় ৮ লাখ ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ৭ লাখের মতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও অন্যান্য কাজে দায়িত্ব পালন করবে।
হাসান আমান, ঢাকা ( লেখকের নিজস্ব অভিমত, এর জন্য নয়া দিগন্ত দায়ী নয়)